ট্রাভেল সেফটি টিপস
ছুটিতে ঘুরতে গিয়ে নিরাপদ থাকার উপায়
ছুটিকে আনন্দপূর্ণ এবং স্মরনীয় করার জন্য ভ্রমনের আগে প্রস্তুতি নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। ভ্রমনকে নিরাপদ করতে সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং
সেখানে থাকাকালিন পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী। কিন্তু, ছুটিতে যাওয়ার সময় আমরা উত্তেজিত থাকি, যার কারণে অনেক কিছুই ভুলে যাই। তাই নিম্নে উল্লেখ করা ছুটিতে ঘুরতে গিয়ে নিরাপদ থাকার উপায় সম্পর্কে সকলেরই জেনে নেওয়া করে নেওয়া জরুরী।
১. আপনার গন্তব্য নিয়ে গবেষনা করুন
ভ্রমনে যাওয়ার আগে যেখানে যেতে চান সেই স্থান সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরী। আপনি যে এলাকায় ঘুরতে যাবেন সেই এলাকার স্থানীয় আইন, রীতিনীতি এবং সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে জেনে নিন। এটি আপনাকে অপ্রীতিকর বিপদ থেকে রক্ষা করবে।
২. আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা নিন
কোথাও ছুটি কাটাতে গিয়ে শারীরিকভাবে নিরাপদ থাকতে সে এলাকার আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। আবহাওয়া নিয়ে ধারণা থাকলে সেই অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করতে পারবেন। হতে পারে আপনি যে এলাকায় বাস করছেন সেখানে হয়তো প্রচন্ড গরম এবং আপনি সেই অনুযায়ী পোশাক নিয়ে গেলেন, কিন্তু যাওয়ার পরে দেখলেন সেখানে শীতকাল! আপনার অজ্ঞতা তখন হয়তো আপনার সুন্দর ছুটিটাকেই নষ্ট করে দিবে। তাই অবশ্যই কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগে সেই এলাকার আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।
৩. পূর্ব পরিকল্পনা করুন
ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগে নিরাপদ থাকতে অবশ্যই পূর্ব পরিকল্পনা করতে হবে। এর মধ্যে থাকতে পারে থাকা, খাওয়া, যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার গুলো। যেখানে বেড়াতে যাবেন সেখানে কতদিন থাকবেন, কোথায় থাকবেন, কি খাবেন সেই অনুযায়ী বাজেট নির্ধারন করুন। আগে থেকে এই পরিকল্পনা করে নিলে কোনো বাড়তি ঝামেলা হবেনা।
৪. মৌলিক নিরাপত্তা বিধি অনুসরন করুন
ছুটিতে ঘুরতে গিয়ে নিরাপদে থাকার জন্য সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করুন।
জিনিস পত্রের উপর নজর রাখা,
অপরিচিত জায়গায় একা যাওয়া থেকে বিরত থাকা এবং
অপরিচিত মানুষের উপর বিশ্বাস স্থাপন থেকে বিরত থাকতে হবে।
ছুটি কাটাতে যেয়ে প্রায়শই মানুষ অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদে পরে মৌলিক নিরাপত্তা বিধি অনুসরন না করায়। তাই কোথাও ঘুরতে গেলে অবশ্যই এই ব্যপারে সচেতন থাকতে হবে। আপনি যখন ভ্রমন করছেন অপরাধ বা সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকি আছে এমন এলাকা গুলি এড়িয়ে চলতে হবে। জনবহুল এলাকায় থাকার চেষ্টা করুন।
৫. আপনার সীমা সম্পর্কে জানুন
আপনার শারিরীক এবং মানসিক সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন থাকুন। নিজেকে খুব বেশি চাপ দেয়া থেকে বিরত থাকুন। এটি আপনাকে ছুটির সময় সুস্থ ও নিরাপদ থাকতে সাহায্য করবে।
৬. স্থানীয় রীতিনীতি সম্পর্কে সচেতন থাকুন
প্রতিটি স্থানের নিজস্ব রীতিনীতি এবং বৈচিত্র থাকে। পর্যটক হিসেবে সেগুলো আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। তাই কোনো ধরনের কটুক্তি করা, কিংবা অসম্মান করা যাবেনা। স্থানীয় রীতিনীতি, ঐতিহ্য, ও সংস্কৃতিকে সম্মান এবং শ্রদ্ধা করতে হবে।
৭. রাজনৈতিক আলাপ / বিক্ষোভ এড়িয়ে চলুন
আপনার ভ্রমনকে নিরাপদ করতে অবশ্যই রাজনৈতিক আলাপ এড়িয়ে চলুন। আপনি ছুটি কাটাতে গেছেন মানসিক প্রশান্তির জন্য। সেটি সব সময় মনে রাখতে হবে। রাজনৈতিক বিক্ষোভে যোগদান, কিংবা সেখানে ছবি তোলা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এগুলো দ্রুত হিংসাত্নক হয়ে উঠতে পারে।
৮. প্রয়োজনীয় ওষুধ সাথে রাখা
যদি আপনি প্রতিদিন ওষুধ সেবন করে থাকেন তাহলে প্রয়োজনীয় ওষুধ সাথে নিতে হবে। ছোট্ট নোট করতে পারেন কখন কিভাবে ওষুধ সেবন করতে হবে। এতে করে আপনি কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে পরলে আপনার সাথে থাকা কেউ যেন আপনাকে সাহায্য করতে পারেন। আপনি কতদিন থাকবেন সেই অনুযায়ী ওষুধ সাথে নিন।
যদি আপনি সুস্থও হন তবুও ভ্রমনে নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু ওষুধ সাথে রাখবেন। যেমন জ্বর, মাথাব্যথা, গ্যাষ্ট্রিক, বমির ওষুধ সাথে রাখতে পারেন। আরো ভাল হয় যদি আপনি সাথে করে মেডিকেল কিট রাখেন। এটি ছুটিতে ভ্রমণে গেলে আপনাকে বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করবে।
৯. প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা
কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আগে আপনি নিরাপদ থাকতে প্রাথমিক চিকিৎসার একটা কোর্স করে নিতে পারেন। আর যদি আগে থেকে এ ব্যপারে আপনার ধারণা থাকে তাহলে তো একধাপ এগিয়ে আছেন আপনি। প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয় গুলোর সাথে অন্তত বেসিক ধারণা রাখতে হবে।
১০. প্রিয়জন কিংবা দলবেঁধে ছুটি কাটাতে যান
মানুষ সামাজিক জীব। স্বভাবগতভাবে মানুষ একা সময় কাটাতে পারেনা। পারলেও সেটা আনন্দহীন হয়ে পরে। তাই প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে ছুটি কাটান। এতে আনন্দপূর্ণ সময় কাটাতে পারবেন।
১১. গুরুত্বপূর্ণ নথির কপি রাখা
কোথাও বেড়াতে গেলে অবশ্যই সাথে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, প্রেসক্রিপশন, পাসপোর্ট ইত্যাদি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সাথে রাখতে পারেন। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদে পরলে এই ডকুমেন্টস গুলো আপনাকে সহায়তা করবে। হোটেল বা রিসোর্ট এ থাকার জন্য অবশ্যই এই ডকুমেন্টস গুলো কাজে দিবে।
যদি আপনি বিবাহিত হন আর আপনার স্ত্রী/ স্বামিকে সহ বেড়াতে যান, তাহলে সাথে করে কাবিননামা বা বিয়ের রেজিষ্ট্রির ফটোকপি সাথে নিবেন। পর্যটন এরিয়া গুলোতে কিছু দালাল শ্রেনির লোক সারাক্ষন থাকে আর এদের কাজ হচ্ছে ব্ল্যাক মেইল করে টাকা পয়সা নেয়া। আপনি হয়তো আপনার প্রিয়জনের সাথে খুনসুটি করছেন, এমন সময় এই দালালদের আবির্ভাব হবে আর আপনাকে ফাঁসিয়ে দিবে। তাই ছুটিতে ভ্রমণে গিয়ে নিরাপদ থাকার জন্য সাথে অবশ্যই বিয়ের ডকুমেন্টস রাখতে হবে।
১২. কার্ড ব্যবহার করুন
ছুটিতে কার্ড ব্যবহার করাই অনেক ভাল। নগদ টাকা হারিয়ে গেলে সেগুলো ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। কিন্তু কার্ড ব্যবহার করলে হারিয়ে গেলেও টাকা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই চেষ্টা করুন সাথে কার্ড রাখার।
১৩. অপরিচিতদের থেকে সতর্ক থাকুন
অপরিচিত এলাকায় এই ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আপনি একা বসে আছেন এমন সময় কেউ আপনাকে কাছে ডাকলো কোনো সাহায্য চাওয়ার কথা বলল কিংবা আপনাকে লোভনীয় কোনো অফার দিলো। আপনি না বুঝে তার সাথে গেলেন, তারপর দেখা গেল আপনি জ্ঞান হারিয়ে কোথাও পরে আছেন আপনার সাথে থাকা অর্থ, দামি মোবাইল, ঘড়ি কিছুই নেই। এরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে না চাইলে অপরিচিত জনদের সাথে কথা বলা ও শোনা এড়িয়ে চলতে হবে। সেইসাথে জনহীন এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে।
১৪. ছুটিতে ঘুরতে যাওয়ার আগে ফেসবুকে ষ্টাটাস দিন
কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আগে পরিচিত জনদের জানানো বা ফেসবুক, টুইটার বা অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়ায় জানাতে পারেন। আপনি যেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন সেখানে আপনার পরিচিত কেউ থাকলে আপনাকে সহায়তা করতে পারবে। কোথাও ঘুরতে গেলে আগে থেকেই সেই জায়গা সম্পর্কে কারো অভিজ্ঞতা থাকলে তার কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারেন।
১৫. উপযুক্ত পোশাক নির্বাচন
আরামদায়ক অনুভুতির জন্য পোশাকের গুরুত্ব অপরিসীম। ধরা যাক আপনি পাহাড়ে ঘুরতে গেছেন কিন্তু আপনি অনেক লম্বা পোশাক পরে গেছেন। পাহাড়ে ওঠার সময় বারবার আপনার পোশাক আপনার পায়ে গেঁথে যাচ্ছে! হয়তো হঠাৎ করে পায়ে লাগলো আর আপনি নিচে পরে গেলেন!
তাই ভ্রমণে নিরাপদ থাকার জন্য কোথাও যাওয়ার আগে সেই স্থানের উপর ভিত্তি করে পোশাক নির্বাচন করতে হবে। প্যান্ট পাজামা টাকনুর উপরে ভাজ করে রাখুন।
শুধু পোশাকের সাইজ এর ব্যপারে নয় সাথে পোশাকটি আবহাওয়ার সাথে কতটা আরামদায়ক হবে, পরিবেশের সাথে কতটা মানানসই হবে সেই ব্যপার গুলো মাথায় রেখে পোশাক নির্বাচন করতে হবে।
১৬. হাইড্রেটেড থাকুন
কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন। চেষ্টা করুন এলকোহল বা ক্যাফেইন যুক্ত পানি কম পান করার সম্ভব হলে এড়িয়ে চলা। ছুটিতে ঘুরতে যাওয়ার সময় সঙ্গে পানির বোতল রাখতে পারেন। সব সময় বাহির থেকে পানি কেনা সম্ভব নাও হতে পারে। তাছাড়া পর্যটন এড়িয়ায় পানির দাম অত্যাধিক বেশি। সঙ্গে পানির বোতল থাকলে আপনার অর্থ কিছুটা সাশ্রয় হবে।
১৭. ব্যক্তিগত জিনিসপত্র কাছে রাখা
আপনার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র কাছে রাখুন। ভ্রমনের সময় এটি নিরাপদ থাকার জন্য অবশ্যই অনুসরন করতে হবে। আপনার মানিব্যাগ, ফোন, এগুলো সব সময় আপনার সাথে রাখতে হবে। কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আপনি আলাদা করে ছোট একটি ব্যাগে নিতে পারেন। সেই ব্যাগে হ্যান্ডওয়াশ, প্রাইমারি কিট, ওষুধ, টাকা পয়সা, চার্জার, পাওয়ার ব্যাংক, ইত্যাদি রাখতে পারেন।
১৮. অপরিচিতদের কাছ থেকে খাবার বা পানিয় গ্রহন করবেন না
অপরিচিতদের কাছ থেকে খাবার বা পানিয় গ্রহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। খাবার বা পানির সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে আপনাকে অচেতন করে দিতে পারে তাই এ ব্যপারে সাবধান থাকতে হবে। ছিনতাই বা ক্ষতি করার জন্য কারো পানিয়তে মাদকদ্রব্য মেশানো অস্বাভাবিক নয়। তাই নিজের পানিয় সাবধানে রাখতে হবে।
১৯. আপনার গন্তব্যের জন্য জরুরী নম্বর
আপনি যেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন সেখানে যাওয়ার আগে সেখানকার জরুরী নম্বর গুলো সাথে রাখুন। আপনি যখন বেড়াতে যাচ্ছেন সেখানে জরূরী অবস্থায় কাকে কল করবেন তা জানা জরুরী।
স্থানীয় পুলিশ
অ্যাম্বুলেন্স
ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট এর নম্বর সাথে রাখুন।
যদি আপনি দেশের বাইরে ঘুরতে যান তাহলে অবশ্যই দূতাবাস বা কনস্যুলেটের একটি নোট করুন।
এই তথ্য গুলো আপনি নিরাপদ স্থানে রাখুন। যেমন একটি নোটে, ফোনে যাতে আপনি প্রয়জনের সময় সহজেই অ্যাক্সেস করতে পারেন। এছাড়াও আপনার চিকিৎসার প্রয়োজনও হতে পারে তাই নিকটস্থ হাসপাতাল বা ক্লিনিকের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা রাখুন।
২০. মোবাইলে চার্জ রাখা
জরুরী পরিস্থিতিতে আপনার ফোন একটি লাইফলাইন হতে পারে, তাই মোবাইলে চার্জ রাখা এবং সর্বদা আপনার সাথে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি আপনার ফোন চার্জ করার জায়গা খুঁজে না পান তাহলে আপনার সাথে একটি পোর্টেবল চার্জার বা পাওয়ার ব্যাঙ্ক সাথে রাখুন। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে অবশ্যই মোবাইলে ফুল চার্জ করে নিতে হবে।
চার্জ না থাকলে পরিবারের মানুষের সাথে যোগাযোগ করা বা জরুরী সময়ে কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন না। ভাল হয় যতটা সম্ভব কম ফোন ব্যবহার করুন এবং ফোনের ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখুন। এতে ফোনে দীর্ঘ সময় চার্জ থাকবে।
২১. গুগল লোকেশন শেয়ার
কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আগে পরিবার বা নিকটতম আত্নীয়ের সাথে গুগল লোকেশন শেয়ার করতে পারেন। এতে করে তারা আপনাকে ট্র্যাক করতে পারবে। আপনি কোনো বিপদে পরে হয়তো যোগাযোগ করার সুযোগ নাও পেতে পারেন, লোকেশন শেয়ার করা থাকলে আপনার পরিবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে। এছাড়াও লোকেশন শেয়ার করা থাকলে আপনার পরিবার জানতে পারবে আপনি কখন কোথায় আছেন।
২২. মোবাইল ভাইব্রেট মুডে রাখুন
ছুটিতে কোথাও ঘুরতে গেলে মোবাইল ভাইব্রেশন মূডে রাখতে পারেন। কোলাহলপূর্ণ জায়গায় অনেক সময় ফোনের রিংটোন শোনা যায়না। ফোন কাছে থাকলে ভাইব্রেশন করা থাকলে সহজেই বোঝা যায়।
২৩. পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারে সতর্কতা
পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন। যেমন: বিমানবন্দর, কফিশপ, হোটেল ইত্যাদি স্থানে পাওয়া যায় এবং ব্যবহারও সুবিধাজনক হতে পারে। কিন্তু এগুলো হ্যাকারদের জন্যেও সুবিধাজনক হতে পারে।
ছুটিতে ঘুরতে গিয়ে নিরাপদ থাকার জন্য আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এবং অনলাইনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পাবলিক নেটওয়ার্কে আপনার ব্যাংক একাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড এর তথ্যের মত সংবেদনশীল তথ্য এক্সেস করা এড়িয়ে চলুন। আপনার যদি সংবেদনশীল তথ্য লিখতেই হয়, তাহলে নিশ্চিত করুন যে ওয়েবসাইটটি সুরক্ষিত (URL-এ “https” দেখুন) এবং আপনার ডেটা এনক্রিপ্ট করতে একটি ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) ব্যবহার করতে পারেন।
২৪. ইন্টারনেট সংযোগে VPN ব্যবহার
VPN হলো একটি টুল যা আপনার ইন্টারনেট সংযোগ এনক্রিপ্ট করে এবং আপনার অনলাইন কার্যকলাপকে নিরীক্ষণ বা ট্র্যাক করা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। আপনি যখন একটি পাবলিক Wi-Fi নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছেন তখন এটি বিশেষভাবে কাজে লাগতে পারে, কারণ এটি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখতে সাহায্য করতে পারে৷ ফ্রি এবং পেইড উভয়ই ধরনের ভিপিএন রয়েছে।
২৫ অপরিচিত বা লাইসেন্সবিহীন ট্যাক্সি ব্যবহারকে না বলুন
অপরিচিত বা লাইসেন্সবিহীন ট্যাক্সি থেকে রাইড গ্রহণ করবেন না। আপনি যখন একটি নতুন জায়গায় থাকবেন, তখন আপনি কীভাবে আশেপাশে যাবেন সে সম্পর্কে সতর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ। অপরিচিতদের কাছ থেকে রাইড গ্রহণ করা বা লাইসেন্সবিহীন ট্যাক্সি ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো অনিরাপদ হতে পারে। পরিবর্তে, লাইসেন্সযুক্ত ট্যাক্সি বা রাইড-শেয়ারিং অ্যাপের মতো নিরাপদ পরিবহন পরিষেবাগুলি বেছে নিন। আপনি যদি নিশ্চিত না হন যে কোন গুলি নিরাপদ, হোটেলের কর্মীদের বা স্থানীয়দের সুপারিশের জন্য জিজ্ঞাসা করুন।
বিভিন্ন গন্তব্যর উপর ভিত্তি করে ছুটিতে নিরাপদ থাকার উপায়
সমুদ্র
সৈকত অবকাশ অনেক ভ্রমণকারীদের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান। আপনি বালিতে বিশ্রাম নিতে চান, সমুদ্রে সাঁতার কাটতে যাই চান সাথে অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন, রোদ চশমা, টাওয়েল নিতে ভুলবেন না। রোদ থেকে আপনাকে সুরক্ষা প্রদান করার মত জিনিস নিতে ভুলবেন না।
বন
আপনি যদি ছুটিতে প্রকৃতি উপভোগ করতে চান তবে একটি বন আপনার জন্য উপযুক্ত পছন্দ হতে পারে। হাইকিং এবং ক্যাম্পিং থেকে পাখি দেখার এবং প্রকৃতির ফটোগ্রাফি পর্যন্ত, বনের পরিবেশে উপভোগ করার জন্য অনেক কিছু করতে পারেন। আবহাওয়ার জন্য উপর ভিত্তি করে পোশাক বেছে নিতে হবে এবং আপনার অ্যাডভেঞ্চারের সময় আপনাকে সুস্থ রাখতে প্রচুর পানি এবং শুকনো খাবার সাথে রাখতে হবে।
পর্বত
পর্বত ভ্রমণকারীদের জন্য আদর্শ বিশেষ করে যারা হাইক করতে, আরোহণ করতে পছন্দ করেন। অনেক সময় উপরে উঠতে যেয়ে আহত হতে পারেন, তাই প্রয়োজনীয় ওষুধ পত্র এবং প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিতে হবে।
দেশের বাইরে ছুটিতে ঘুরতে গিয়ে নিরাপদ থাকার উপায়
ভিসা ও টিকা
কিছু দেশে প্রবেশের জন্য ভিসা পেতে সময় লাগে। কোনো বিলম্ব বা সমস্যা এড়াতে আপনার ভ্রমণের আগে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। উপরন্তু, কিছু গন্তব্যে প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট টিকা প্রয়োজন হতে পারে, যেমন জন্ডিস, জ্বর বা কলেরার জন্য। আপনার গন্তব্যের জন্য টিকার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আপ-টু-ডেট তথ্যের জন্য রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলির ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।
স্থানীয় ভাষায় কয়েকটি বাক্যাংশ শিখুন
আপনি স্থানীয় ভাষায় সাবলীলভাবে কথা না বললেও, কিছু বাক্যাংশ জেনে রাখা সহায়ক হতে পারে যা আপনাকে জরুরি অবস্থায় সাহায্য করতে পারে। অথবা যখন আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে থাকতে পারে
“নিকটতম হাসপাতাল কোথায়?”, “আপনি কি ট্যাক্সি কল করতে পারেন?” বা “আমার সাহায্য দরকার” এর মতো বাক্যাংশগুলি আয়ত্ত করে নিতে পারেন। আপনি অনলাইনে বা ভাষা শেখার অ্যাপের মাধ্যমে ভাষা শেখার উৎস খুঁজে পেতে পারেন। অথবা আপনি যদি গন্তব্যে বেশি পরিমাণ সময় ব্যয় করেন তবে স্থানীয় গাইড বা অনুবাদক নিয়োগের কথা বিবেচনা করুন৷ জরুরী পরিস্থিতিতে বা স্থানীয় লোকেদের সাথে আপনার যোগাযোগের প্রয়োজন হলে কয়েকটি বাক্যাংশ জানা আপনাকে অনেক সাহায্য করতে পারে।
মুদ্রা
আপনার দেশের বাইরে গন্তব্যে ভ্রমণ করার সময় একটি বিষয় বিবেচনা করা উচিত তা হল মুদ্রা। বিনিময় হার নিয়ে গবেষণা করা এবং যাওয়ার আগে স্থানীয় মুদ্রার সাথে নিজেকে পরিচিত করা গুরুত্বপূর্ণ। জরুরী পরিস্থিতিতে আপনার প্রয়োজন হলে আপনি অল্প পরিমাণ নগদ অর্থ আপনার সাথে নিতে পারেন, তবে বেশিরভাগ লেনদেনের জন্য ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা সাধারণত নিরাপদ। আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা সম্পর্কে আপনার ব্যাঙ্ক এবং ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিকে জানান, কারণ তারা অস্বাভাবিক লেনদেনের কারণে ফ্ল্যাগ করতে পারে যদি তারা অবগত না থাকে যে আপনি ভ্রমণ করছেন।
ছুটিতে ঘুরতে গিয়ে নিরাপদ থাকার উপায় গুলো জেননে আগে থেকে সব কিছু পরিকল্পনা করা এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিলে নিঃসন্দেহে আপনি আনন্দপূর্ণ সময় কাটাতে পারেন। আজকের লেখা আমরা ভ্রমণে নিরাপদ থাককার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগে ঝটপট আমাদের টিপস গুলো দেখে নিলে আপনিও নিরাপদে ঘুরে আসতে পারেন আপনার পছন্দের গন্তব্য থেকে।